আমরা প্রায় সবাই এন্ড্রয়েড এর ভক্ত। এটি অসাধারণ একটি মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম। আমরা যারা এন্ড্রয়েড স্মার্টফোন ব্যবহার করি, তারা বিভিন্ন সময় তাদিয়ে কিছু সাধারণ দরকারি কাজ যেমন ভিডিও চলানো, এডিটিং, গেমিং, বা অন্য কাজ করার জন্য আলাদা আলাদা অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ ব্যবহার করে থাকি । গুগোল প্লেস্টোরে গেলে আমরা যে কোনো কাজের জন্য অনেক এন্ড্রয়েড অ্যাপ দেখতে পায়। আমাদের মধ্যে প্রশ্ন জাগতেই পারে যে কোনটি বিশ্বের সব চেয়ে জনপ্রিয় অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ? পৃথিবী জুড়ে কোন অ্যাপের ব্যবহারকারী সংখ্যা সব চেয়ে বেশি? আজ কেবল জনপ্রিয় ১০ টি অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ নিয়ে।

১। হোয়াটস অ্যাপঃ

আমাদের তালিকার এক নম্বরে আছে হোয়াটস অ্যাপ। এটি সব চেয়ে জনপ্রিয় ফ্রি অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ। এই ‘ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং’ অ্যাপটি অ্যান্ড্রয়েড ছাড়াও বিভিন্ন অপারেটিং সিস্টেমের স্মার্টফোনে ব্যবহার করা যায়। এটি দিয়ে মেসেজিং ছাড়াও ভয়েস কলস, ভয়েস মেসেজেস, ইমেজ শেয়ারিং, গ্রুপ চ্যাটিং ছাড়াও আরও বেশ কিছু সুবিধা পাওয়া যায়। ফেসবুকের সহ-প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ সম্প্রতি হোয়াটস অ্যাপটি কিনে নিয়েছেন। প্রতিদিন প্রায় ১০লাখ মানুষ হোয়াটস অ্যাপ ডাউনলোড করছেন।

২। ফেসবুক মেসেঞ্জার

মেসেঞ্জারের টুং টাং শব্দ শোনেনি এমন মানুষ খুব কমই আছে। আমাদের তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে আছে ফেসবুক মেসেঞ্জার।

এই ফ্রি অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপটিও একটি ‘ ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং’ সার্ভিস। এটি মোবাইল কিং বা ডেস্কটপেও ব্যবহার করা যায়। এ অ্যাপ দিয়ে ছবি, ভিডিও, স্টিকার, অডিও ফাইল, ভয়েস ও ভিডিও কল আদান-প্রদান করা যায়।

৩। ইনস্টাগ্রাম

এটি মূলত ছবি আদান-প্রদানের এ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। মোবাইল কিং বা ডেস্কটপে এই যোগাযোগ মাধ্যমটি দিন দিন ভীষণ জন প্রিয় হয়ে উঠছে। সব চেয়ে জনপ্রিয় ফ্রি অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপস গুলোর তালিকায় ইনস্টাগ্রামের অবস্থান তৃতীয়। এর সক্রিয় ব্যবহার কারীর সংখ্যা প্রতি মাসে প্রায় ৮০কোটি। প্রতি দিন প্রায় ৭কোটির বেশি স্থির চিত্র ও ভিডিও আদান-প্রদান করা হয় ইনস্টাগ্রামে।

৪। ফেসবুক

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অ্যাপস গুলোর মধ্যে ফেসবুক আমদের দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় হলেও গোটা বিশ্বে এর অবস্থান চতুর্থ। তবে এক সময় ফেসবুক বিশ্বের সব চেয়ে জনপ্রিয় ফ্রি অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে এর জনপ্রিয়তা কিছুটা কমেছে। ফেসবুকে মাসিক সক্রিয় ব্যবহার কারীর ২০০কোটিরও কিছু বেশি।

৫। ফেসবুক লাইট

জন প্রিয়তা বিচারে পাঁচে আছে ফেসবুকের অ্যাপ ‘ফেসবুক লাইট’ । কয়েক বছর আগে এ অ্যাপটি ছাড়ে ফেসবুক। সাশ্রয়ী দামের ও কম গতির অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনে ইন্টারনেট চালাতে এটি কার্যকরী। এই অ্যাপটি স্মার্টফোনে ‘ইনস্টলেশন’ -এর জন্য ২মেগাবাইটের চেয়ে কম জায়গা নেয়।

৬। উইশ

উইশ একটি জনপ্রিয় মোবাইলই -কমার্স অ্যাপ। এই শপিং অ্যাপটি ফ্রি অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপসের জনপ্রিয়তার তালিকায় ছয়ে অবস্থান করছে।

মোবাইলই-কমার্সের এই অ্যাপটি ব্রাজিল, চীন এবং উত্তর আমেরিকা ছাড়াও ইউরোপে ভীষণ জনপ্রিয়। সানফ্রান্সিসকোয় ২০১৩ সালে যাত্রা শুরু করে ‘উইশ’।

৭। স্ন্যাপ চ্যাট

স্ন্যাপচ্যাট জন প্রিয়তায় ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রামের কঠিন প্রতি দ্বন্দ্বী। এই অ্যাপটি ২০১১ সালে যাত্রা শুরু করে। এর প্রতিদিনের ব্যবহারকারী প্রায় ১০কোটির বেশি। স্ন্যাপচ্যাট ছবি আদান-প্রদান পাশাপাশি জি মাল্টিমিডিয়া মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন হিসেবে বেশ জনপ্রিয়। স্ন্যাপচ্যাটে প্রতিদিন প্রায় ১মিলিয়ন স্ন্যাপ তৈরি করা হয়। স্ন্যাপচ্যাটে প্রতি দিনের ভিউয়ারের সংখ্যা এক কোটির বেশি।

৮। সাবওয়েসার্ফারস

তালিকার ৮নম্বরে আছে একটি মোবাইল গেম। সাবওয়েসার্ফারস ক্লান্তিহীন দৌড়ের একটি মোবাইল গেম। এগেমটি সমন্বিত ভাবে ডেনমার্কেল কিলো ও সাইবো গেমস তৈরি করেছে। প্রতি মাসে এগেমটি তিন কোটিরও বেশি বার ডাউনলোড হয়।

৯। স্পোটিফাই মিউজিক

সুইডিশ এই অ্যাপটি গান ও ভিডিও স্ট্রিমিংয়ের জন্য দারুণ জনপ্রিয়। ২০০৮ সালে এই অ্যাপটি যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে অ্যাপটির মোট সম্পদের পরিমাণ প্রায় ১৬০০ কোটি ডলার। এই অ্যাপের মাসিক সক্রিয় ব্যবহারকারী সংখ্যা ১৪কোটিরও বেশ।

১০। মেসেঞ্জার লাইট

এটি অনেকটা ফেসবুক লাইটের মতোই । জনপ্রিয়তার বিচারে এ অ্যাপটির অবস্থান দশম। এই অ্যাপটির সাইজ ১০মেগাবাইটেরও কম। এই অ্যাপে সহজে ইমেসেজ, ছবি ও ইন্টারনেট লিংক পাঠানো যায়। এছাড়াও এটি দিয়ে স্টিকার দেখা যায় এবং অডিও ও ভিডিও কল করা যায়। বিশ্বে মেসেঞ্জার লাইটের ব্যবহার কারীর সংখ্যা পাঁচ কোটির বেশি।

এই ছিলো বর্তমান সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় ১০টি ফ্রী অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ নিয়ে আজকের আলোচনা। ।আমরা দেখলাম যে, মোবাইল জগতে ফেসবুকের দাপট কতটা! আশা করি আপনাদের ভালো লেগেছে। ভালো লাগলে শেয়ার করতে ভুলবেন না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *