যেভাবে আমাদের ভবিষ্যৎ বদলে দেবে ইউজার এক্সপিরিয়েন্স বা ইউএক্স (UX) ডিজাইন
যেভাবে আমাদের ভবিষ্যৎ বদলে দেবে ইউজার এক্সপিরিয়েন্স বা ইউএক্স (UX) ডিজাইন

যেভাবে আমাদের ভবিষ্যৎ বদলে দেবে ইউজার এক্সপিরিয়েন্স বা ইউএক্স (UX) ডিজাইন
প্রযুক্তির দুনিয়াতে ইউজার এক্সপিরিয়েন্স ডিজাইনের গুরুত্ব যত বাড়বে, এআই (Ai) প্রযুক্তির গুরুত্বও তত বাড়তে থাকবে।
ইউজার এক্সপিরিয়েন্স ডিজাইনাররা এখন বিশ্বের বড় বড় প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ অনেক পদে জায়গা করে নিচ্ছেন।
মোটকথা, ভবিষ্যতে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রেই ইউজার এক্সপিরিয়েন্স ডিজাইনের অনেক বড় ভূমিকা থাকবে।
১. আরো সহজ এবং দ্রুতগতিতে ডিজাইন
কোনো অ্যাপ্লিকেশনের সবচেয়ে ভালো ইউজার এক্সপিরিয়েন্স ফিচারগুলি যখন নির্ণয় করা যাবে, তখন ওই ধরনের অ্যাপ্লিকেশন ডিজাইন করার সময় আর প্রথম থেকে কাজ শুরু করার প্রয়োজন হবে না।
এখন প্রতিষ্ঠান আর ডিজাইনারদের মধ্যে ইউজার এক্সপিরিয়েন্স বিষয়ক অভিজ্ঞতার লেনদেন আগের যেকোনো সময়ের চাইতে অনেক বেশি। এর সাথে সাথেই ডিজাইন করা আরো সহজ ও সাশ্রয়ী হচ্ছে। এতে সময়ও আগের চেয়ে কম লাগছে।
এছাড়া এআই (Ai) প্রযুক্তি ব্যবহার করার ফলে সফটওয়্যারের মধ্যেই প্রয়োজনীয় সব তথ্য থাকছে। তাই বিভিন্ন ডিজাইন সফটওয়্যারের সাহায্যে এখন খুব অল্প সময়ের মধ্যেই ডিজাইন বানানো যায়। আর সেক্ষেত্রে ইউজার এক্সপিরিয়েন্স-এর ব্যাপারগুলি নিয়েও কাজ করা সহজ হয়।
এছাড়াও অনলাইন এবং প্রযুক্তি সংক্রান্ত বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশনের জন্য প্রয়োজনীয় টুলগুলি এআই সফটওয়্যার লাইব্রেরিতে সংরক্ষিত থাকে এখন। ফলে প্রয়োজনের সময় এগুলি সহজেই কাজে লাগানো সম্ভব হচ্ছে।
২. ডিজাইন পরিবর্তিত হবে ইউজারের বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে
এআই-এর ব্যবহার বাড়ার ফলে ইউজাররা তাদের ব্যবহার করা ওয়েবসাইট আর অ্যাপ্লিকেশনে এখন আরো বেশি পার্সোনালাইজড এক্সপিরিয়েন্স পাচ্ছে। এআই সফটওয়্যার ব্যবহারকারীর বয়স, আগ্রহ, লিঙ্গ, স্বভাবসহ অসংখ্য বৈশিষ্ট্য নিয়ে কাজ করতে পারে।
একবার ইউজারের সকল বৈশিষ্ট্য জানা হয়ে গেলে এআই তাদের কথা মাথায় রেখে ওয়েবসাইট এবং অ্যাপ্লিকেশন-এর বিভিন্ন ফিচারে পরিবর্তন আনতে পারে। ভিজিটরদের তাৎক্ষণিক অভিজ্ঞতা দেয়ার জন্য ডিজিটাল সার্ভিসের ইউজার ইন্টারফেস অতি দ্রুত ব্যবহারকারীর চাহিদামত পরিবর্তিত হয়ে যায়।
৩. চাহিদা বাড়বে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডিজাইনারদের
বিভিন্ন শিল্পক্ষেত্র প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীল হওয়ার পর থেকে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডিজাইনারদের চাহিদা কমে যাওয়া শুরু হয়েছে। তবে এআই-এর ব্যবহার আরো ব্যাপক আকারে শুরু হলে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডিজাইনারদের চাহিদা আবারো বাড়তে থাকবে।
এর প্রধান কারণ হচ্ছে ভার্চুয়াল এবং অগমেন্টেড রিয়ালিটি। কোনো কিছুর ভার্চুয়াল এবং অ্যানহ্যান্সড রিয়ালিটির ডিজাইন তৈরির জন্যে সেই বিষয় এবং পরিবেশের ব্যাপারে পরিষ্কার এবং বিস্তৃত ধারণা প্রয়োজন।
ত্রি-মাত্রিক বা থ্রিডি প্রিন্টিং এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল ম্যানুফ্যাকচারিং-এর কারণেও ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডিজাইনারদের চাহিদা বাড়বে ভবিষ্যতে। এখনই অনেক ম্যানুফ্যাকচারিং প্ল্যান্ট এই থ্রিডি প্রিন্টিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের কাস্টমাইজড প্যাটার্ন বানাচ্ছে, তাও বেশ কম খরচে।
বিভিন্ন শিল্পে নতুন ম্যাটেরিয়াল নিয়ে কাজ শুরু হলে এমন জনবলের চাহিদা বাড়বে, যাদের সেই ম্যাটেরিয়ালের ব্যাপারে গভীর জ্ঞান এবং এসবের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা নিয়ে পরিষ্কার ধারণা আছে। নতুন কোনো ম্যাটেরিয়াল কীভাবে সর্বোচ্চ দক্ষতায় কাজে লাগানো যায়, সেটা নিয়ে গবেষণার জন্য ম্যাটেরিয়াল টেকনোলজিস্টদের চাহিদাও বাড়বে ভবিষ্যতে।
৪. ডিজাইন নিয়ে চিন্তা করার গুরুত্ব আরো বাড়বে
ইউজার ইন্টারফেস বা ইউজার এক্সপিরিয়েন্স-এর গুরুত্ব বাড়ার কারণে এখন ডিজাইন সম্পর্কে ধারণা নেয়ার প্রয়োজনীয়তা এড়িয়ে যাওয়ার উপায় নেই। কারণ ভবিষ্যতে প্রযুক্তি আর ডিজাইনের কাজ একটা অন্যটার সাথে আরো ভালোভাবে যুক্ত হবে।
অদূর ভবিষ্যতেই প্রতিষ্ঠানের এক্সিকিউটিভ থেকে শুরু করে অফিসকর্মীরা পর্যন্ত বুঝতে পারবে যে, ব্যবসার জগতে কাজ করার জন্যে ডিজাইন এবং প্রযুক্তি, দুইই বোঝার প্রয়োজন আছে।
সবচেয়ে সফল ইউজার এক্সপিরিয়েন্স তৈরির জন্যে এআই এবং মানুষের মধ্যে সমন্বয় এনে কাজ করা হবে। আর এভাবেই ডিজাইন নিয়ে চিন্তা করার গুরুত্ব বাড়তে থাকবে।
#ইউজার_এক্সপিরিয়েন্স #ডিজাইন #ভবিষ্যৎ